কভিডে বেকার হয়েছে ২৬ লাখের বেশি মানুষ

28
7109
কভিডে বেকার হয়েছে ২৬ লাখের বেশি মানুষ
কভিডে বেকার হয়েছে ২৬ লাখের বেশি মানুষ

বাংলাদেশ ব্যাংক

কভিডে বেকার হয়েছে ২৬ লাখের বেশি মানুষ

দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে কভিডের অভিঘাত। কর্মসংস্থান হারিয়েছে বিপুলসংখ্যক মানুষ। এ নিয়ে বেসরকারিভাবে নানা তথ্য এলেও এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৯ সদস্যের একটি গবেষক দল। বিভিন্ন উপাত্ত বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তারা জানিয়েছেন, মহামারীর কারণে দেশে গত বছর কর্মসংস্থান হারিয়েছে ২৬ লাখের বেশি মানুষ।

কভিডে বেকার হয়েছে ২৬ লাখের বেশি মানুষ
কভিডে বেকার হয়েছে ২৬ লাখের বেশি মানুষ


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপের পরিসংখ্যানকে ভিত্তি হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সংখ্যা বিবেচনায় দেশের মোট শ্রমশক্তির আকার ৬ কোটি ৪০ লাখ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষকরা জানাচ্ছেন, কভিডের কারণে গত বছর বেকার হয়ে পড়েছে এ শ্রমশক্তির ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। সে হিসাবে দেশে গত বছর কর্মচ্যুত হয়েছে ২৬ লাখ ১৪ হাজার ৪০০ মানুষ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের এপ্রিল-মে মাসে শিল্প-কারখানা ও পরিবহন বন্ধ ছিল। অফিস-আদালত বন্ধের পাশাপাশি জনসমাগমেও ছিল নিষেধাজ্ঞা। সার্বিকভাবে অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজারে এর বিরূপ প্রভাব দেখা গিয়েছে। কভিডের প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা গিয়েছে শিল্প খাতে। এ খাতে কর্মচ্যুতির হার ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। এর বিপরীতে সেবা খাতে নিয়োজিতদের মধ্যে বেকার হয়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। তুলনামূলক কম পড়েছে কৃষি খাতে। খাতটিতে কর্মসংস্থান হারিয়েছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট গবেষকরা বলছেন, আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী মোট শ্রমশক্তি থেকে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ কর্মসংস্থান কমেছে। বিবিএস শ্রমশক্তি জরিপ সর্বশেষ হয়েছে ২০১৭ সালে। এর পরের বছরগুলোয় শ্রমশক্তির আকার হিসাব করা হয়েছে প্রবণতা বিশ্লেষণের ভিত্তিতে। এছাড়া গত বছরের সাধারণ ছুটি চলাকালের ঘটনাপঞ্জিকেও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। গত বছরের এপ্রিল ও মে মাসে কর্মজীবী মানুষের হারানো শ্রমঘণ্টা হিসাব করা হয়েছে ওই সময়কালের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের ভিত্তিতে। এ হিসাব থেকে দেখা গেছে, সব খাতে শ্রমঘণ্টা হারানোর চিত্র এক নয়। কৃষি খাতে এর প্রভাব তুলনামূলক কম পড়েছে। কিন্তু কর্মঘণ্টা বেশি হারিয়েছেন শিল্প ও সেবা খাতের কর্মীরা।

প্রতিবেদনটি তৈরিতে শ্রমঘণ্টা নিয়ে একাধিক বৈশ্বিক সূচক বিবেচনায় নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা। কোন খাত কী পরিমাণ মজুরি হারিয়েছে সে বিষয়গুলোও বিশ্লেষণ করে দেখা হয়েছে। এর ভিত্তিতে খাতভিত্তিক কর্মঘণ্টা হারানোয় মজুরি ক্ষতির পরিমাণ আলাদাভাবে দেখানো হয়েছে। বিবেচনায় নেয়া হয়েছে কভিড-পূর্ববর্তী সময়কালও। পাশাপাশি কভিড-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকের তথ্যের ভিত্তিতে কর্মসংস্থান হারানোর হিসাব তুলে ধরা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ গবেষণার তথ্য আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গত বছরের এক সমীক্ষার তথ্য তুলে ধরে তারা বলছেন, কভিডকালে গত বছর কর্মঘণ্টা হারিয়েছে ১২ দশমিক ২ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষণায় এ হার দেখানো হয়েছে ১৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, কভিড থেকে পুনরুদ্ধারে সহায়তার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ হিসাব কাজে লাগানো যেতে পারে। কর্মসংস্থান হারানোর হিসাবে কোন খাত অগ্রাধিকার পেতে পারে তার দিকনির্দেশনা এর মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব। মোট দেশজ উৎপাদনের হিসাব (জিডিপি) করার ক্ষেত্রেও এটি কাজে লাগানো যেতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রান্তিক প্রতিবেদন সম্পাদনার দায়িত্বে রয়েছেন নির্বাহী পরিচালক ড. মো. হাবিবুর রহমান। তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, অর্থনীতির নানা দিক নিয়ে পর্যালোচনা, গবেষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের মধ্যে পড়ে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তা নিয়মিতভাবে গবেষণার কাজে নিয়োজিত আছেন। করোনার শুরু থেকেই অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা তৈরি ও বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক নেতৃত্ব দিচ্ছে। কোন খাতে কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে, খাতগুলোতে কী ধরনের প্রণোদনা দরকার—এ ধরনের রূপরেখা দাঁড় করানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সচেষ্ট রয়েছে।

এদিকে দেশের অর্থনীতির বিশ্লেষণ-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব নিয়ে প্রশ্ন আছে। সংস্থাটির হিসাবে সাধারণ সময়ে দেশের বেকারত্বের হার ৪ শতাংশের মতো। এ হিসাব বিবেচনায় নিলে কভিডে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। করোনার সময়ে বিবিএসের একটা সমীক্ষা বলে বেকারত্বের হার ৪ থেকে ২৭ শতাংশে চলে গিয়েছিল। পরে এটা আবার ৪ শতাংশে নেমে আসে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব যদি বিবেচনায় নেয়া হয় তাহলে আমরা সাধারণ সময়ে যে বেকারত্ব, সেই অবস্থাতেই ফিরে এসেছি। অন্যান্য অনেক জরিপে দেখা গেছে, অনেকে সেবা খাত থেকে অন্যান্য খাতে চলে গেছে। এ কাঠামোগত পরিবর্তনগুলো বিবেচনায় নিতে হবে। অন্যান্য যত জরিপ হয়েছে সেখানে কর্মসংস্থান হারানোর আকারটি আরো বড়।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, জরিপে দেখা গেছে প্রথম ধাক্কায় মোট শ্রমশক্তির মধ্যে আনুষ্ঠানিক খাত ছাড়া প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেকার হয়ে গিয়েছিল। এদের মধ্যে পরে অনেকেই আবার কাজে ফিরেছেন। তবে এক খাত থেকে অন্য খাতে সরে যাওয়ায় আয় কমেছে। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দ্রুত স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস করতে হবে। এরপর অগ্রাধিকার দিতে হবে প্রণোদনা প্যাকেজে, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারিদের জন্য যেগুলো সেগুলো প্রথম প্যাকেজ শেষ করার পর নতুন প্যাকেজ দিতে হবে। সামাজিক সুরক্ষার যেসব কর্মসূচি আছে সেগুলোর মাধ্যমে নগদ সহায়তা পৌনঃপুনিক করা এবং ভিত্তি বাড়ানোর দরকার আছে। এর মাধ্যমে চাহিদা সৃষ্টি হবে। এতে সরবরাহ ব্যবস্থাও সক্রিয় হবে। আবার কর্মসংস্থানও হবে। এভাবে অর্থনীতিতে ইতিবাচক চক্র সৃষ্টি করা সম্ভব।

দেশের শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, কর্মসংস্থান হারানো নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের তথ্য দিচ্ছেন। এর মধ্যে একটি হিসাব বলছে, কভিডকালে বহু লোক চাকরি হারিয়েছে, এর মধ্যে ৮৫ শতাংশের মতো কাজে ফিরেছে। কিন্তু একই খাতে না। অন্য খাতে বিশেষ করে কৃষি খাতে কাজে যোগ দিয়েছে, এদের কর্মঘণ্টা অনেক কমেছে। আসলে প্রকৃত চিত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে অসুবিধাটা হলো দেশের ৮৭ শতাংশ কর্মসংস্থানই অনানুষ্ঠানিক। এদের কাজ নিয়ে সঠিক হিসাব কী করে সম্ভব? এখন কর্মসংস্থান যতটুকুই কমুক সেই পরিস্থিতি থেকে পুনরুদ্ধারের পথে ছিলাম আমরা। কিন্তু লকডাউনের প্রভাবে পরিস্থিতি আবারো খারাপ হবে।

বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) সভাপতি কামরান টি রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, বর্তমানে দেশের বেশির ভাগ জেলাই কভিডের ঝুঁকিতে রয়েছে। ফলে আমরা আবার পিছিয়ে পড়ছি। এখন টিকা কর্মসূচি যত দ্রুত সম্ভব হবে তত দ্রুতই এ পরিস্থিতি থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব। পুনরুদ্ধার নির্ভর করছে চাহিদা সৃষ্টির ওপর। লকডাউন থাকলে চাহিদা কমবে, অর্থনীতিকে সক্রিয় করতে আবারো কিছুটা সময় লাগবে। বর্তমান সংক্রমণ পরিস্থিতি আমাদের জন্য বেশ উদ্বেগের। আমাদের চাহিদা লকডাউনে সৃষ্টি হবে না। লকডাউন থাকবে না কখন, যখন পরিস্থিতি উন্নত হবে। কখন হবে, যখন টিকা প্রদান কর্মসূচি সম্পন্ন হবে।

২০২০ সালের আগস্ট মাসে প্রকাশিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক প্রক্ষেপণ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, কভিড-১৯-এর প্রভাবে বাংলাদেশে স্বল্পমেয়াদে কর্মসংস্থান হারাবে ১১ লাখ তরুণ। আর দীর্ঘমেয়াদে এ সংখ্যা ১৬ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে প্রক্ষেপণে বলা হয়েছিল। ‘ট্যাকলিং দ্য কভিড-১৯ ইয়ুথ এমপ্লয়মেন্ট ক্রাইসিস ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৬৬ কোটি তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা দূর করতে জরুরি ভিত্তিতে বড় আকারের ও লক্ষ্যভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ জানিয়েছে এডিবি-আইএলও।

28 COMMENTS

  1. Авиабилеты дешево от проверенных авиакомпаний! https://avia-bilet.online/rossiya-sankt-peterburg – купить авиабилеты недорого. Купить авиабилеты дешево, авиабилеты онлайн. Поиск от 728 проверенных авиакомпаний по всему миру! Самые популярные направления перелетов по самым низким ценам в интернете!

  2. Авиабилеты дешево от проверенных авиакомпаний! https://avia-bilet.online/rossiya-sankt-peterburg – купить авиабилеты недорого. Купить авиабилеты дешево, авиабилеты онлайн. Поиск от 728 проверенных авиакомпаний по всему миру! Самые популярные направления перелетов по самым низким ценам в интернете!

  3. Здравствйте!
    Срочно требуется замена замка на входной металлической двери? Сразу после Вашего обращения по нужному адресу будет отправлен квалифицированный мастер. Он качественно выполнит необходимую работу в самые короткие сроки.Замена дверных замков Любой сложности.Сможем оперативно поменять замок в железной двери после взлома преступниками. Заменить замок в металлической двери, если он вышел из строя по разным причинам. Предложим грамотно подобранные запорные механизмы после изучения входной двери. Новые замковые устройства от известных торговых марок по лучшим ценам в Москве. Предоставим клиенту гарантию на выполненную специалистом компании работу.Поменяем, установим или заменим замок.г. Москва, ул. Шипиловская д.52. Говорят, каждый дом начинается с входной двери. Продолжить эту истину можно вполне прозаическим утверждением – каждая дверь, в свою очередь, начинается с замка. Именно он становится залогом безопасности для всех, кто в доме находится, позволяет сохранить имеющиеся ценности и обеспечить желаемую приватность личной жизни. Но, как и любому рукотворному изделию, замку со временем свойственно ломаться, да, и ключи от него – вещь мелкая, способная потеряться. В обоих этих случаях становится необходимо поменять замки, и то, как это будет сделано, позволит чувству спокойствия и ощущению комфорта поселиться в вашей душе.Наш мастер выезжает в течении 20 минут в любой район Москвы, после Вашего звонка. Все наши мастера – профессионалы с многолетним опытом работы. Мы работаем с замками любой сложности. Наш сотрудник выезжает на место уже с замком.Как мы работаем?Предлагаемый нами ассортимент замков и фурнитуры.Замену цилиндров (личинок) дверных замков. Подробнее Поможем полностью заменить замок в металлической двери с установкой изделия как накладного, так и врезного типа любой сложности секретности. Подробнее Занимаемся монтажом и обслуживанием электромеханических замков, в частности работаем с их перекодировкой и изготовлением новых ключей. Подробнее Устанавливаем все принятые в мировой практике системы защиты от взлома (бронепластины, броненакладки). Подробнее Установка, врезка замков в металлические и деревянные двери. Подробнее Осуществляем ремонт замков, дверей, дверных ручек любой сложности. Подробнее Обивка дверей винилискожей. Установка панелей, накладок МДФ на двери. Подробнее Экстренное вскрытие дверных замков. Подробнее Устанавливаем системы видеонаблюдения и СКУД. Подробнее Ремонт и регулировку входных дверей. Подробнее Замену и установку дверной фурнитуры. Подробнее.

    Параметры цилиндровых механизмов, на которые стоит обратить внимание:На фото : сломанный Барановичи ШО-25 сменили с доработками.Надёжность и класс стойкости к взлому. Длина цилиндра, подбирается по толщине двери; Наличие поворотного вертушка для закрывания изнутри; Прочность: зависит от качества металла. Ключи недорогих брендов из-за повышенной хрупкости ломаются в замочной скважине.Замок и цилиндр могут быть разного производства, например: в замок Mottura(Италия) можно поставить цилиндр Evva(Австрия). Также есть цилиндры под шестерёнку — для MUL-T-LOCK, SUPERLOCK, PANDOOR. Их наряду с обычными (под «флажок») выпускают фирмы Мультилок, EVVA, KABA. В ситуации, когда захлопнулась входная дверь, а документы находятся внутри, вскрытие производится в присутствии представителей правоохранительных органов, которые после вскрытия проверят подтверждающие документы.Переезд, поломка старого замка, смена двери, потеря ключа, — все это может привести к тому, что вам срочно потребуется сменить дверной замок. Теоретически каждый может сделать это самостоятельно, но на практике повредить или сломать дверь или новую запорную систему при установке значительно легче, чем произвести замену правильно и быстро.металлических входных; деревянных входных; деревянных межкомнатных; из ПВХ со стеклопакетом.Наша компания работает в соответствии со всеми правовыми нормами и требованиями. Поэтому, ели требуется экстренно вскрыть и поменять запорное устройство, перед этой процедурой мастер попросит предъявить документы, подтверждающие законность проникновения в жилое или офисное помещение. К таким документам относятся:Если вам требуется срочная переустановка замочного устройства входной железной двери, обращайтесь в «ФоксЛок». Мы предложим вам выбор новых замочных механизмов от простых цилиндров и сувальдных систем до элитных мастер-систем с возможностью перекодировки ключей. Все наши работники проходят ежегодную стажировку и знакомы со всеми современными моделями запоров, поэтому не только произведут срочное вскрытие, но и помогут с установкой современного замкового блока.


    krasnogorsk.locks-master.ru